নিজস্ব প্রতিবেদক: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র মুছাপুর ক্লোজারে ঘুরতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে মোট ৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার আরো দুইটি লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হচ্ছেন, চরফকিরা ইউনিয়নের মাদরাসার শিক্ষক নূরুল আনোয়ারের মেয়ে রাবিতা (১৩) ও একই এলাকার আবুল কালামের মেয়ে বিবি ফাতেমা (১৫)। নিহত রাবিতা চরফকিরা আজগর আলী দাখিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ ও বিবি ফাতেমা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এর আগে বুধবার কামরুন নাহার ফেন্সী (১৬) ও অজ্ঞাতনামা ২বছরের এক শিশু লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর ব্যবসায়িক নৌকা বা বোট চলাচল সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার চাপরাশিরহাট আজগর আলি মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রী ও অভিবাবক সহ ১৮০ জনের একটি দল মাদ্রাসা থেকে মুছাপুর ক্লোজারে বেড়াতে গিয়ে ১২জন শিক্ষার্থী ও অভিবাবক সহ ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা ভাড়া করে নদীতে ঘুরতে যায়।
প্রচন্ড বাতাসের কারনে নৌকাটি কিছুদুর যাওয়ার পর নৌকাটি উল্টে ডুবে গেলে কামরুন নাহার ফেন্সী (১৬) ও অজ্ঞাতনামা ২বছরের এক শিশু মারা যায়। নিহত কামরুন নাহার ফেন্সি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের মো. জাহিদ হোসেনের মেয়ে। বাকী কয়েকজন সাঁতরে, অন্য নৌকা ও অন্যান্য দর্শনার্থীদের সহযোগিতায় তীরে উঠ।
উদ্ধারকৃত দর্শনার্থীদের মধ্যে আহতরা হচ্ছেন- চরফকিরা ইউনিয়নের আজগর আলী দাখিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ও সিরাজুল হকের মেয়ে প্রমি আক্তার (১৭), আবুল কালামের মেয়ে ফাতেমা আক্তার (১৫), কামাল উদ্দিনের ছেলে তানজিলা আক্তার (২০) এবং বেলাল হোসেনের মেয়ে ফাতেমা বেগম (১৭), শহীদুল ইাসলামের মেয়ে সানজিদা ইসলাম। উদ্ধার হওয়ার অন্যদের নাম তাৎক্ষনিক জানা যায়নি।
আজগর আলী দাখিল মাদরাসার সহকারী অধ্যক্ষ আব্দুল হাই জানান, তিনিসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে মাদরাসা থেকে ভ্রমণে মুছাপুর ক্লোজারে আসেন। বিকেলে তাদের মধ্যে ১২ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক নৌকা নিয়ে নদীতে ঘুরতে যায়। নৌকা ডুবির ঘটনায় তার মাদ্রাসার শিক্ষাক নূরুল আনোয়ারের মেয়ে রাবিতা এখনো নিখোঁজ রয়েছে। বাকী শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে লোকজন দাবি করছে। স্থানীয়দের নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মজিদ জানান, ক্লোজারে ব্যবসায়িকভাবে কোন নৈাকা বা বোট চালানোর জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেল পোনে ৫টার দিকে কয়েকজন পর্যটক নিয়ে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা ছোট ফেনী নদীতে যায়। কিছুক্ষণ পর প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় নৌকায় থাকা কয়েকজন যাত্রী তীরে উঠতে সক্ষম হলেও এক শিশুসহ ৫ জন নিখোঁজ হয়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা কামরুন নাহার ফেন্সি (১৮) ও এক শিশুর লাশ উদ্ধার করলেও মাদরাসা ছাত্রীসহ তিনজন নিখোঁজ থাকে।
এ ঘটনার পর থেকে কোন প্রকার ব্যবসায়িক নৌকা বা বোটে চলাচল ক্লোজার এলাকায় নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। একই সঙ্গে জনসাধারণকেও ক্লোজার এলাকায় সাবধনতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।